সজনে পাতার পুষ্টিগুণ
সজনে আমাদের দেশের একটি জনপ্রিয় সবজি। সজনে বিভিন্নভাবে রান্না করা হয়। এটির বৈজ্ঞানিক নাম Moringa oleifera। সজনের পাশাপাশি সজনে পাতার অনেক উপকারিতা রয়েছে। গবেষকরা সজনে পাতাকে সুপার ফুড বলে থাকেন।
সজনে পাতা বা মরিঙ্গার উপকারিতা ও খাওয়ার পদ্ধতি নিয়ে জানিয়েছেন মিরপুর ইসলামী ব্যাংক অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারের পুষ্টিবিদ তাসরিয়ার রহমান ।
তাসরিয়ার রহমান জানান, সজনে পাতার মধ্যে রয়েছে বিপুল পরিমাণ খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন।পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়া্ জিংক, ভিটামিন ভিটামিন সি এগুলো ছাড়াও প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেট ও আছেএতে। অনেকগুলো পুষ্টি একসঙ্গে থাকার কারণে এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
প্রতি ১০০ গ্রাম সজনেপাতা থেকে পাওয়া যায়
শর্করা ৮.২৮ গ্রাম
ফাইবার ২.0 গ্রাম
স্নেহ ১ .৪০ গ্রাম
প্রোটিন ৯ . ৪০ গ্রাম
ম্যাগনেসিয়াম ১৪৭ মিলিগ্রাম
সোডিয়াম ১৯ মিলিগ্রাম
ভিটামিন এ প্রায় ৩৭৮ মাইক্রগ্রাম
ভিটামিন সি ৫১ . ৭ মিলিগ্রাম
সূচিপত্রঃ সজিনা পাতার পুষ্টিগুণ
সজনে পাতার পুষ্টিগুণ
- এটি রোগ প্রতিরোধ সহযোগিতা করে।
- হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। পুরুষদের টেস্টোস্টেরেন। হরমোন বাড়াতে সাহায্য করে
- অর্থাৎ শরীরের বিভিন্ন ব্যথা দূর করে।
- পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা যেমন খাবার সহজে হজম না হওয়া, পেটে অতিরিক্ত গ্যাস জমে থাক্ বুক জ্বালা ইত্যাদি সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
- হাড়ো দাঁতের সুরক্ষায় ভূমিকা রাখে সজনে পাত্তা হয় প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে যা দাঁত ও হাড়ের গঠনের। উপাদান
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
- সজনে পাতাতে রয়েছে ভিটামিন সি, যা এন্টি অক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি ত্বকের বয়সের ছাপ দ্রুত পড়তে দেয় না।
- সজনে পাতায় রয়েছে ভিটামিন এ যা চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- প্রচুর পরিমাণে এন্টি মাইক্রোবিয়াল এবং এন্টি ব্যাকটেরিয়াল যোগ রয়েছে। ত্বকের সংক্রমণ, মূত্রনালী সংক্রমণ এবং হজমের সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
সজনে পাতা বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যেতে পারে
- শাকের মতো ভেজে খাওয়া যেতে পারে বা সিদ্ধ করে ভর্তা করে খাওয়া যেতে পারে। তবে রান্না করলে ভিটামিন সি অনেকাংশে কমে যায়।
- প্রাকৃতিকভাবে রোদে শুকিয়ে গুড়া করে খাওয়া যেতে পারে।
- ব্লেন্ড করে জুস হিসেবেও খাওয়া যেতে পারে।।
- চায়ের মধ্য দিয়েও খাওয়া যেতে পারে।
- কোন কিছুর অতিরিক্ত গ্রহণ শরীরের জন্য ভালো নয়। তাই সজনে পাতার গুড়া বা রস একদম নিয়মিত না খেয়ে একটু বিরতি দিয়ে খাওয়া ভালো। দশ থেকে পনেরো দিন খাওয়ার পর কিছুদিন বিরতি দিয়ে খেলে ভালো হয়।
- সজনে পাতার অনেক উপকারিতা থাকলেও এটি অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে সৃষ্টি হতে পারে বিভিন্ন সমস্যা।
- সজনে পাতা অতিরিক্ত খাওয়া হলে বমি বমি ভাব, পেটের সমস্যা ক্ষুধা মান্দা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।
- ব্লাড প্রেসারের ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত সজনে পাতার গুড়া বা রস খেতে থাকলে ব্লাড প্রেসার কমে যেতে পারে।
- সজনে পাতা সংলগ্ন ডালগুলো আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর। এ ডালগুলোতে ক্ষতিকর উপাদান থাকে, যা যেগুলো আমাদের দেহের ইমিউনিটি সিস্টেমের ক্ষতি করে।
কারা সজনে পাতা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করবেন
- গর্ভাবস্থায় সজনে পাতা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। সজনের পাতা সংলগ্ন ডালে যে বিষাক্ত উপাদান রয়েছে সেটি এই সময় শরীরে প্রবেশ করলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা অনেক। সজনেপাতা গুড়া বা রসের ক্ষেত্রে এ ডাল মিশ্রিত থাকতে পারে। তাই গর্ভকালীন এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকা ভালো।
- ডায়াবেটিস রোগীদের অনেক মনে অনেকে মনে করেন, শুধু সজনে পাতা খেলে ডায়াবেটিস অর্থাৎ রক্তের সুগার ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু বিষয়টি আসলে এরকম নয়। ডায়াবেটিস রোগীরা শরীরে পাতার জুস বা গুড়া খেলে এটি সহায়ক হিসাবে ভূমিকা রাখবে। যাদের প্রি ডায়াবেটিস তারা সজনে পাতা খাওয়ার মাধ্যমে এবং সঙ্গে অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণ করে দেহে শুয়ারের মাত্রা ঠিক রাখার চেষ্টা করতে পারেন।
- হাইপোথাইরয়েড বা কিডনিজনিত সমস্যা আক্রান্তরা সজনে পাতাকে একমাত্র প্রতিষেধক হিসাবে বিবেচনা করবেন না।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url