আপনার জীবন পরিবর্তন করার জন্য সবার আগে যা করতে হবে


সবার আগে ঝেড়ে ফেলতে হবে হতাশা।সময় এখনও শেষ হয়ে যায়নি।  আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে যে আপনি পারবেন। বেশিরভাগ মানুষই নিজের বর্তমান অবস্থা নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। 


তারা সবাই ভাবে তাদের জীবনটা আরও বেশি সুন্দর হতে পারতো কিন্তু এ জন্য তারা কিছুই করেনা।বাকি সময়টাতে কীভাবে নিজের জীবন পরিবর্তন করতে পারেন সে সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক-

সুচিপত্রঃ আপনার জীবন পরিবর্তন করবেন যে কয়েকটি নিয়ম মেনে-

 কাজে আরও বেশি মনোযোগী হোন

নিজের আরও সফল সংস্করণ হয়ে উঠতে কাজে মনোযোগী হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চ্যালেঞ্জিং কাজগুলোতে ফোকাস করার জন্য নিরবচ্ছিন্ন সময় প্রয়োজন। এই অনুশীলনটি উল্লেখযোগ্যভাবে আপনার উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারে এবং আপনার কর্মজীবন, ব্যক্তিগত প্রকল্প এবং লক্ষ্যগুলোকে আরও বড় সাফল্যের দিকে নিয়ে যেতে পারে। 

অনেকে তাদের কমফোর্ট জোন থেকে বের হওয়ার ভয়ে বা প্রয়োজনীয় প্রচেষ্টা সম্পর্কে উদ্বেগের কারণে চ্যালেঞ্জিং কাজগুলো এড়িয়ে চলে। যারা কঠোর পরিশ্রমকে আলিঙ্গন করে এবং এই চ্যালেঞ্জগুলোর মোকাবিলা করে তারা লক্ষ্য এবং স্বপ্ন অর্জন করতে সক্ষম হয়।

নিয়মিত কোরআন ও হাদিস পড়ুন

হতাশা ও দুশ্চিন্তা নিয়ে কোর’আনের যে সূরায় বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে, তার নাম সূরা মা’আরিজ। ৭০ নং সূরা।
সূরাটির শুরুতেই হতাশা ও দুশ্চিন্তার কারণগুলো বর্ণিত হয়েছে। হতাশার মূল কারণ হলো অধৈর্য।
অনন্ত সময়ের বিবেচনায় আমরা পৃথিবীতে কেবল দুই’এক সেকেন্ড অবস্থান করি। মাঝে মাঝে পৃথিবীর এই দুই’এক সেকেন্ড সময়কে অতিবাহিত করতে গিয়ে আমাদের অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়। কিন্তু, আখিরাতের অনন্ত সুখের কাছে আমাদের পৃথিবীর এই কষ্ট ক্ষণিকের এবং খুবই সামান্য।

যেমন ধরুন, শিশু বাচ্চা জন্ম নেয়ার পর তাদের হাতে-পায়ে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধের টিকা দিতে হয়। ইনজেকশনের সাহায্যে এই টিকাগুলো দেয়ার সময়ে শিশুরা অনেক কষ্ট পায়। তাদের আব্বু-আম্মুরাও দুঃখ পায়। কিন্তু, শিশুর ভবিষ্যৎ জীবনের কথা চিন্তা করে, শিশুটি যাতে সুস্থ ও রোগমুক্ত থাকতে পারে সে কথা ভেবে, বাবা-মা তাদের আদরের শিশুটিকে কষ্ট দিয়ে থাকে। তেমনি পৃথিবীর কষ্ট হলো ক্ষণিকের। আখিরাতের অনন্ত সুখ পাবার জন্যে পৃথিবীতে সবাইকে কিছু না কিছু কষ্ট করতে হয়। আমাদের পার্থিব কষ্টগুলো হলো ভবিষ্যৎ বা অনন্ত জীবনে সুখী হবার টিকা। তাই নিয়মিত কোরআন ও হাদিস পড়ুন।

নতুন কিছু শিখুন

আপনার জীবনকে পরিবর্তন করার আরেকটি শক্তিশালী উপায় হলো প্রতিদিন নতুন কিছু শেখা। পড়া, অনলাইন কোর্স, দক্ষতা বৃদ্ধির অনুশীলন বা কর্মশালার মাধ্যমেই হোক না কেন, এই অভ্যাস আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে সমৃদ্ধ হতে সাহায্য করবে। এর ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আপনার জ্ঞান প্রসারিত হবে।


এটি আপনাকে আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে এবং একটি উৎপাদনশীল মানসিকতা গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।

কৃতজ্ঞ থাকুন

সফল হওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আপনি যে তিনটি জিনিসের জন্য কৃতজ্ঞ তা লিখে প্রতিটি দিন শুরু বা শেষ করুন। এই সাধারণ অভ্যাস আপনার ফোকাসকে জীবনের ইতিবাচক দিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে এবং আপনার সামগ্রিক মানসিকতার উন্নতি করবে।

 আপনি যখন হতাশ বা রাগান্বিত বোধ করেন, তখন আপনি যে জিনিস এবং অভিজ্ঞতার জন্য কৃতজ্ঞ তা লিখে রাখতে কিছুক্ষণ সময় নিন। এই অনুশীলনটি দ্রুত আপনার মেজাজকে নেতিবাচক থেকে ইতিবাচকে রূপান্তর করতে পারে। ইতিবাচক মানসিকতা বজায় রাখলে তা আপনার লক্ষ্যে পৌঁছানোর ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।

নিয়মিত ডিজিটাল ডিটক্স নিন

ডিজিটাল মিডিয়া, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এবং নেটফ্লিক্সের মতো বিনোদন পরিসেবাগুলো আপনার মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর অনেক বেশি প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি আপনি কাজের জন্য ফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহার করলেও এই ডিভাইসগুলো থেকে নিয়মিত বিরতি নেওয়া অপরিহার্য।
ডিজিটাল মিডিয়া থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে প্রতিদিন বা সপ্তাহে নির্দিষ্ট সময় আলাদা করুন। এই অনুশীলন মানসিক চাপ কমাতে, সম্পর্ক উন্নত করতে এবং কাজে মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে।

মানুষের জন্য কাজ করুন

ভালো কাজে জড়িত থাকা দাতা এবং গ্রহণকারী উভয়ের কল্যাণ বয়ে আনে। এটি ইতিবাচক চেতনা বৃদ্ধি করে। আপনার দৈনন্দিন রুটিনে জনকল্যাণমূলক কাজ যোগ করলে তা আপনার আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে তুলবে। 

এটি কাজের গুণমানও বৃদ্ধি করে। ছোট ছোট কাজ একটা সময় আপনাকে একজন ভালো মানুষে রূপান্তর করবে।

 নেতিবাচক প্রভাব দূর করুন

নেতিবাচক প্রভাব দূর করতে কী আপনাকে হতাশ করছে তা খুঁজে বের করুন। নির্দিষ্ট ব্যক্তি, চাপের জায়গা বা খারাপ অভ্যাস- যাই হোক না কেন, তা বাদ দিন। সনাক্ত করার পরে নিজেকে রক্ষা করার জন্য সীমানা নির্ধারণ করুন।

 ইতিবাচক মানুষের আশেপাশে থাকুন এবং একটি ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করুন। নেতিবাচক অভ্যাসগুলোকে ভালো অভ্যাস দিয়ে প্রতিস্থাপন করুন। যেমন সকালে ঘুমিয়ে না থেকে ব্যায়াম করা বা শখ কাজ করা।

প্রতিদিন ব্যায়াম করুন

প্রতিদিন দশ হাজার কদম হাঁটা বা জিমে করার অভ্যাস করুন। নিয়মিত ওয়ার্কআউট করার অনেক সুবিধা রয়েছে। এটি আপনাকে অতিরিক্ত ওজন কমাতে, মেজাজ উন্নত করতে ও হতাশা কাটাতে সাহায্য করবে। এই অভ্যাস আপনার জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া

স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া একটি শক্তিশালী অভ্যাস যা আপনার জীবনকে ব্যাপকভাবে উন্নত করতে পারে। তাজা ফল, লেবু এবং সবুজ শাক-সবজির মতো পুষ্টিকর খাবার বেছে নিন। 

প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ সীমিত করুন এবং অতিরিক্ত খাওয়া এড়াতে পরিমিত খাওয়ার অভ্যাস করুন। হাইড্রেটেড থাকার জন্য পর্যাপ্ত পানি ও তরল খাবার খান। এতে সুস্থ থাকা সহজ হবে। আর সুস্থ থাকলে সফলতার পথটাও অচেনা থাকবে না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url